লেখক বইতে বাংলা ভাষায় সাব-অল্টার্ন স্টাডিজ গোষ্ঠীর চিন্তাধারা লিপিবদ্ধ করেছেন। তত্ত্বের নিহিতার্থ একত্রিত করে সাব-অল্টার্ন স্টাডিজের সামগ্রিক চেহারা দেখার এই প্রচেষ্টা বাংলা ভাষায় প্রথম। লেখক যে দৃষ্টিতে বিষয়টি দেখেছেন বা বলার চেষ্টা করেছেন - এভাবে অন্যরা দেখেননি। অথচ সাব-অল্টার্ন স্টাডিজের প্রভাব রয়েছে শিল্প-সাহিত্যে। সমালোচনা সাহিত্যেও এই তত্ত্বকে সুনির্দিষ্ট কাঠামোর মধ্যে আনেননি কেউ। কোনো তাত্ত্বিক এ ধরনের চিন্তাও করেননি। একটি তাত্ত্বিক কাঠামো নির্মাণের জন্যই এই বই। বইতে মিল্টনের জিজ্ঞাসা হলো, এই গোষ্ঠীর লেখকদের লেখার বাংলাভাষ্য তৈরি নয় বরং বাঙালি সমাজ ও বাংলা ভাষা-সাহিত্য এই জ্ঞানকাণ্ডের দ্বারা কতটুকু প্রভাবান্বিত হয়েছে তার সম্যক পরিচয় উদ্ধার করা। এই বইতে বাংলা সাহিত্য সমালোচনায় কিংবা বাংলা আখ্যান বিশ্লেষণে নিম্নবর্গীয় তত্ত্বের প্রয়োগ সম্ভবনা বিশদ্ভাবে উন্মোচন করার প্রয়াস আছে। এর আগে বাংলায় 'সাব-অল্টার্নতত্ত্ব' নিয়ে কিছু প্রবন্ধ বা সাহিত্য বিশ্লেষণের কিছু দৃষ্টান্ত থাকলেও সাব-অল্টার্ন স্টাডিজ গোষ্ঠীর তাত্ত্বিক দিকটি অনুপুখ বিবরণে উপস্থাপিত হয়নি। এই তত্ত্বের উদ্ভব, বিকাশ ও বর্তমান পরিস্থিতি একসঙ্গে আলোচনা করার জন্যই বইয়ের অবতারণা। এই গ্রন্থে গবেষণার যৌক্তিকতা, রনজিৎ গুহের জীবন কর্ম ও দর্শন, সাব- অল্টার্ন বা নিম্নবর্গের সংজ্ঞা, গ্রামশির দৃষ্টিতে নিম্নবর্গ ও নিম্নবর্গ চিহ্নিতকরণ সূত্র, নিম্নবর্গের ইতিহাস চর্চার পরিপ্রেক্ষিত বিতর্ক, নিম্নবর্গের চেতনা, নিম্নবর্গের চেতনায় ধর্ম, জাতিভেদের নিরিখে নিম্নবর্গ, সাব-অল্টার্ন তত্ত্বের সাম্প্রতিক প্রবণতা, মহাপ্রয়াণের পরও যিনি সমুজ্জ্বল বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এই গ্রন্থে আলোচিত হয়েছে। আশা করা যায় গ্রন্থটি দ্রুত পাঠকমহলে বিস্তার লাভ করবে।
শতবর্ষে রণজিৎ গুহ ও সাব- অল্টার্ন তত্ত্ব
Ranajit Guha and the Subaltern Theory
Ranajit Guha and the Subaltern Theory -
ড. মিল্টন বিশ্বাস