বটতলা এক মহাসমুদ্র। হুগলি নদীর পাড় দিয়ে গড়ে ওঠা কলকাতার আদি রাস্তা, গড়ে উঠেছিল তার আপন তাগিদে। ঝোপ জঙ্গল কেটে যারা বাস করে গেছেন তাদের হাত দিয়েই ঘটেছিল এর প্রসার। কৃষ্ণবর্ণ মানুষদের জন্য গড়ে ওঠা কৃষ্ণনগরি যা পরিচিত ছিল ব্ল্যাক টাউন নামে। কারণ শ্বেতবর্ণ মানুষেরা ততদিনে চলে এসেছেন জঙ্গল কেটে বসবাস করতে। এবার তারাই করবে ব্যবসা আর শাসন। তাই হোয়াইট টাউন আর ব্ল্যাক টাউনের সীমারেখা প্রয়োজন। কৃষ্ণবর্ণ মানুষগুলো ছিল বেজায় রসিক, প্রমোদ প্রিয়, উদ্যোগী আবার অলস,দিনের বেলায়ও স্বপ্ন দেখেন। এসব বিপরীতমুখী মানুষদের জন্য বিপরীতমুখী মানুষেরাই গড়ে তুলেছিলেন এই বটতলাকে। বটতলা নিজেও জানে না তার কত বিচিত্র চরিত্র। এক সময় বটতলার মানুষরাই বাকি দেশকে পথ দেখাবে। শিক্ষা,সংস্কৃতি, ধর্ম অধর্ম সবই আছে ঘেঁষাঘেষি করে। এই গ্রন্থে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে যেমন—ঘুপছি ঘরের অন্ধকার ফুঁড়ে জেগে উঠল কলকাতার এক শিল্প, সাবিরের দিবারাত্রীর কাব্য, ফরাসি মডেলের গায়ে উঠেছে আমার নকশার শাড়ি, উনিশ শতকের গন্ধ, কারেন্সি নোট জাল করে শিল্পীর হাজতবাস, অন্ধকার হাতড়ে ইতিহাস আবিষ্কার, সিগাল থেকে প্রকাশিত প্রথম বই উনিশ শতকের কলকাতার কাঠ খোদাই, রাতারাতি মৃত ব্যক্তির সামনে বসে পোর্ট্রেট খোদাই করে দিলেন পরের দিন কাগজে ছাপার জন্য, বটতলার আরেক জাদুগ্রন্থ পঞ্জিকা, চিৎপুর আছে চিৎপুর এই বটতলা না হলে কত শিল্পের জন্মই হতো না, সোজা করে লিখতেই ভুলে গেছি এখন মুড়ি ভাজি, কাঠ খোদাইয়ের জাদুতে আজও স্বপ্ন দেখায় ঠাকুরমার ঝুলি , কাঠ খোদাইয়ে ত্রিমাত্রিক প্রিন্ট। প্রচুর গল্প ইতিহাস ও ছবি নিয়েই বই আশা করা যায় এই বই দ্রুত পাঠক মহলে সমাদর লাভ করবে ।
বটতলার ডায়েরি
Bottolar Diary
Bottolar Diary - Ashit Paul
অসিত পাল