ধরুণ, সবকিছুই একটা ছিপের মতো। আপনি সেই ছিপ ধরে। আপনার বিস্ময় —কত পাখি, কত জল, কত মাছ! তারপর এই অনন্ত অপেক্ষার পর যা তুললেন, বিশ্বাস করলেন না। আশেপাশের লোকজন ভয়ে ছিটকে গিয়ে বলল—‘শেষমেশ একে ধরলে? একেই ধরলে শেষমেশ?’ জয়দীপের বিপুপ্তপ্রায় সেই ছিপওয়ালার প্রাথমিক বিস্ময়ের মতো—‘এটা আমার ছিপ নয়, এই ছিপটা কার আমি জানি না।’ অথচ, সে জানে, গল্পগুলো তাঁর। কারণ একমাত্র সে-ই ফাঁকা স্টেশনে গিয়ে চাঁদে আগুন লেগে যেতে দেখেছে। দুজন প্রাচীন বৃদ্ধের হিংস্র টিকে থাকার লড়াইকে নিজের আয়নায় দেখে এসেছে রোজ। তার সামনে মিস্টিক রিকশাওয়ালা, একটা মাকড়শার জাল তাঁর দৈনন্দিনতার রাস্তার, মুখে, নাকে। সে পিঁপড়ের লাইনকে শরনার্থী ভাবে। যাওয়ার রাস্তা, আসার রাস্তার তফাৎ মনে করতে না পেরে স্বপ্ন শেষে জল খেয়ে নেয় খুব করে। তাঁর কথোপকথন দৃঢ় হয়। কার সঙ্গে কথা? প্রেমিকা? সন্তান? সে নিজে? সে কুয়াশার পাহাড়ে, কখনও ক্ষয়িষ্ণু মন্দির ফুঁড়ে বেড়ে ওঠার স্মারক খোঁজে, কাদা ওঠা হ্রদের নাম দেয় হৃদী। তাঁর হাতে কি ধাপ্পা, নাকি সত্যি কফি? তুমুল উৎসবের মাঝে সেই কি মাথা নীচু করে লাগিয়েছিল তাঁর নিজস্ব নারীর চটির স্ট্র্যাপ? পাঠককে এসব উত্তরের খোঁজে টেনে নিয়ে যায় ‘বিপুপ্তপ্রায়।’ এ বই ‘তাদের বাসা, তাদের বৃক্ষশাখার হদিস।’ এ গল্পগ্রন্থের তথাকথিত শেষ নেই বা পাঠ একবার প্রথামাফিক শেষ হলেও বহুদিন তার অনুরণন—‘গান শেষ হয়ে গেছে, এখন এই মৃদু ঘূর্ণন অবশেষ’...
বিলুপ্তপ্রায়
Biluptopray
Biluptopray - Joydip Chattopadhyay
জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়